মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি শুরু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নেদারল্যান্ডের দ্য হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সময় বেলা তিনটায় বিচারের শুনানি শুরু হয়েছে। আদালতে ১৫ জন বিচারপতির সঙ্গে যোগ দিয়েছেন দুজন এডহক বিচারপতি। ওই দুজন গাম্বিয়া ও মিয়ানমারের মনোনীত। আদালতের সিদ্ধান্ত হবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে।

তিনদিনের এ শুনানিতে বিবাদী পক্ষের হয়ে লড়ছেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অং সান সুচি।

এদিকে গত মাসে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)’র পক্ষে গাম্বিয়া আর্ন্তজাতিক আদালতে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের গণহত্যা সংঘটনের অভিযোগ দায়ের করে। বাসস। ভয়েস অব আমেরিকা।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) সূত্রে জানা যায়, প্রথম দফার শুনানিতে আজ গাম্বিয়া এবং আগামীকাল অংশ নেবে মিয়ানমার। গাম্বিয়া ও মিয়ানমার উভয়ে দ্বিতীয় দফার শুনানিতে অংশ নেবে যথাক্রমে বৃহস্পতিবার সকাল ও বিকেলে।

মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অত্যাচার নিপীড়নের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রামকালে সুচি একসময়ে আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিলেন। তিনি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের আইকনে পরিণত হয়েছিলেন। জিতেছিলেন শান্তিতে নোবেল পুরস্কার। কিন্তু মিয়ানমারে রোহিঙ্গা গণহত্যা অস্বীকার এবং অভিযুক্তদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নিতে গিয়ে তিনি এখন বরং নিন্দা ও সমালোচনীর সম্মুখীন হয়েছেন।

শুনানীতে অংশ নিতে সুচি রোববার দ্য হেগে পৌঁছান। তিনি নেপিদো’র কাউন্সিলর দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অপরদিকে বাদী পক্ষে গাম্বিয়ার এর্টনী জেনারেল ও বিচারমন্ত্রী আবু বাকার মারি তামবাদু আইনজীবী প্যানেলের নেতৃত্ব দেবেন।

এদিকে পররাষ্ট্র সচিব এম শহিদুল হকের নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদলও তথ্য উপাত্ত নিয়ে শুনানিতে উপস্থিত থাকছেন। প্রতিনিধিদলে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিও রয়েছে। এক যৌথ কূটনৈতিক বিবৃতিতে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস আইসিজেতে গাম্বিয়াকে সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

জাতিসংঘ সমর্থিত বিশ্বের শীর্ষ এই আদালতে শুনানি শুরুর একদিন আগে মানবাধিকার গ্রুপগুলো মিয়ারমারকে বয়কট করতে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্মম অত্যাচার নিপড়ীনের শিকার হয়ে ৭ লাখ ৩০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর এই ধ্বংসযজ্ঞকে জাতিগত নিধন হিসেবে উল্লেখ করে। মানবাধিকার গ্রুপগুলো একে গণহত্যা বলে বর্ণনা করে।

কিন্তু মিয়ানমার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের শত শত গ্রামে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে সেনাবাহিনী এই অভিযান চালিয়েছে।

গত ১১ নভেম্বর পশ্চিম আফ্রিকার ছোট্ট দেশ গাম্বিয়া সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার গণহত্যা চালিয়েছে মর্মে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মামলা করে। দেশটি ৫৭ সদস্য বিশিষ্ট ওআইসি’র পক্ষে এ অভিযোগ দায়ের করে।

বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া উভয় দেশই ওআইসি’র সদস্য রাষ্ট্র। এছাড়া ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনে মিয়ারমারসহ তিন দেশই স্বাক্ষর করেছে।

এর আগে বাংলাদেশ ওআইসি’র পক্ষে গাম্বিয়ার এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ওআইসি কিছু দায়িত্ব নিয়েছে এটি ভালো খবর।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন

ওয়েবসাইটের কোন কনটেন্ট অনুমতি ব্যতিত কোথাও প্রকাশ করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
Design & Developed BY ThemesBazar.Com